স্টাফ রিপোর্টার ঢাকাঃ
চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা–এর দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের পর অবশেষে সমাজসেবা অধিদপ্তর কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সমিতির সকল অতীত কমিটিকে অবৈধ ও আইনি ভিত্তিহীন ঘোষণা করে তৎক্ষণাৎ সকল নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করেছে দপ্তরটি। একই সঙ্গে অনিয়ম তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা অফিস থেকে ৪১.০১.২৬০০.০০০.২৮.০০০.১১.১৭০৪ নং স্মারক নম্বরে–জারি করা চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেন জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রধান ডেপুটি ডাইরেক্টর আবু সাইদ মো. কাওসার রহমান। ২০১১ সালের পর কোন নথি জমা নেই: সব কমিটিকে অবৈধ বলে অধিদপ্তরের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়—২০১১ সালে নিবন্ধন নম্বর নেওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা কোনো গঠনতন্ত্র, সদস্য তালিকা, নির্বাহী কমিটির তথ্য, অডিট রিপোর্ট কিংবা বার্ষিক প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদপ্তরে জমা দেয়নি। ফলে নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী সমিতিটি দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হয়েছে। এ অবস্থায় বিগত দিনের সকল কমিটি সরকারি বিধি অনুযায়ী অবৈধ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
ফাইলে একমাত্র বৈধ কমিটি—এডভোকেট আব্দুল মমিন চৌধুরীর আহ্বায়ক কমিটি চিঠিতে আরও উল্লেখ আছে—
* সমাজসেবা অধিদপ্তরের সরকারি ফাইলে শুধুমাত্র এডভোকেট আব্দুল মমিন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন আহ্বায়ক কমিটির অস্তিত্বই বৈধ। * এর বাইরে ঘোষিত বা পরিচালিত কোনো কমিটির আইনি ভিত্তি নেই।
অবৈধ নির্বাচন কমিশন ও একতরফা ‘সিলেকশন কমিটি’ বাতিল চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়—সমিতির অতীতে ঘোষিত কোনো নির্বাচন কমিশন সরকারি প্রক্রিয়া অনুযায়ী অনুমোদিত নয়। তাদের মাধ্যমে বিনা ভোটে সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন–এই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ আইনবিরোধী ও অবৈধ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর জানায়—তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমিতির কোনো নির্বাচন বা কমিটি ঘোষণা করা যাবে না।
গণমাধ্যম ও জনসাধারণকে সতর্কবার্তা – অবৈধ ও অদৃশ্য কমিটি কর্তৃক পরিচালিত যেকোনো সংবাদ, বিবৃতি বা নির্বাচনী প্রচারণা গণমাধ্যমে না ছাপানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান বলেন— “সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে—অতীতের সব কমিটি অবৈধ। তাদের নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনও বেআইনি। তাই একতরফা নির্বাচনের নামে যে সিলেকশন চলছে, তা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত। আমরা চট্টগ্রামবাসীকে অনুরোধ করব—অবৈধ কমিটির কোনো কর্মকাণ্ডে বিভ্রান্ত হবেন না।”
চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকার ভবিষ্যৎ কী?
তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে সমিতির পরবর্তী কাঠামো পুনর্গঠন, নির্বাচন এবং সদস্য তালিকা আপডেটের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।