লালমনিরহাট প্রতিনিধি :-
অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে, অধিক মুনাফা পেতে বুকভরা আশা নিয়ে লালমনিরহাটে আগাম জাতের শীতকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। আগাম জাতের ফসলে চাহিদা বেশ। দামও ভালো থাকে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, জেলায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজি ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছরে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের শীতকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে ঝুঁকছেন। সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন শীতকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষাবাদে বিখ্যাত। আগাম জাতের ফুলকপি আর বাঁধাকপি চাষের জন্য তুলনামূলক উঁচু জমি নির্বাচন করতে হয়। পানি জমে না এমন জমি আগাম সবজি চাষের জন্য উপযুক্ত। চারা রোপণ করে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ও সেচ দিয়ে পরিচর্যা করলে ৭০/৭৫ দিনের মধ্যেই ফুলকপি আর বাঁধাকপি ঘরে তোলা সম্ভব। সেই সাথে আগাম জাতের সবজি হিসেবে বেগুন, মরিচ, টমেটো, ধনিয়া পাতা, শিমের চারা রোপন করা হচ্ছে।
আগাম সবজি হিসেবে সারা বাংলাদেশের বাজারে ফুলকপি আর বাঁধাকপিসহ অন্য সবজির চাহিদা রয়েছে প্রচুর। লালমনিরহাটের চাষীদের উৎপাদিত সবজি প্রতিদিন ট্রাকে করে দেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বড় বড় সবজি হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
মহেন্দ্রনগরের চিনিপাড়া গ্রামের চাষী ছব্বুল আলী বলেন, হাট-বাজারে আগাম জাতের সবজির চাহিদা থাকায় বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই চাষিদের। পাইকাররা ক্ষেত থেকেই এসব সবজি ক্রয় করে নিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। অনেক সময় পাইকাররা কৃষকদের ক্ষেত কিনে শ্রমিক দিয়ে সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন।
ফুলকপি চাষীরা রবিউল ইসলাম বলেন, বীজ বপন থেকে ৭০/৭৫ দিনের মধ্যেই ফুলকপি ও বাঁধাকপি বাজারজাত করা সম্ভব। আমি প্রতি বছরে তিনবিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষাবাদ করছি। গত বছরে কপির বীজ লাগানো থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত আমার প্রায় দুই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। তবে প্রায় চার লক্ষ টাকার কপি বিক্রি করেছি। এতে ভালোই লাভবান হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ে, অধিক মুনাফার আশা আমার মতো আশপাশের অনেক চাষীরা শুধু কপি নয়, বেগুন, মরিচ, টমেটো, ধনিয়া পাতা, শিম চাষে ঝুঁকছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন বলেন, হাট-বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা অনুয়ায়ী চাষীরা আগাম জাতের বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ করেছেন। এবার আবহাওয়া ও বাজার দুটোই ভালো থাকায় সবজি চাষে লাভবান হবেন চাষীরা। সেই সাথে আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষীদের পরামর্শ সহ সার্বিক সহযোগীতা দিয়ে আসছি।