কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে এখন আর কেবল ধানের ক্ষেত নয়, চোখে পড়ছে সবুজ তেজপাতার বাগান। কৃষকদের মতে, ধানের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তেজপাতা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলার রাজীব গ্রামের কৃষক মো. আবু সুফিয়ান জানান, তিনি ৬৬ শতক জমিতে ৩৩৩টি তেজপাতা গাছ লাগিয়েছেন। এতে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এর বিপরীতে তিনি এখন পর্যন্ত আয় করেছেন ২ লাখ টাকা। তিনি বলেন, “ধান চাষে খরচ বেশি, লাভ কম। তেজপাতা চাষে পরিশ্রমও কম, আয়ও ভালো। তাই এখন আমি পুরোপুরি তেজপাতার ওপর নির্ভর করছি।”
পীরগাছার চৈতারমোড় এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতি সপ্তাহে কাউনিয়া থেকে প্রায় ৩০০ বস্তা তেজপাতা কিনে ঢাকায় পাঠান। সেখানে প্রতি কেজি ১০৮ থেকে ১১২ টাকায় বিক্রি হয়। ঢাকার রপ্তানিকারকরা সেসব তেজপাতা বিশ্বের ২১ দেশে পাঠাচ্ছেন। তার ভাষায়, “কাউনিয়ার তেজপাতার মান ভালো, তাই সারা বছরই এর চাহিদা থাকে।”
টেপামধুপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসাইন বলেন, ইউনিয়নটিতে বর্তমানে ৬০ হেক্টরের বেশি জমিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে। কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, গভীর বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি তেজপাতা চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। চারা লাগানোর ৪-৫ বছর পর থেকে পাতা সংগ্রহ শুরু হয় এবং একটি গাছ থেকে শত বছর পর্যন্ত তেজপাতা সংগ্রহ করা সম্ভব।
কৃষক, ব্যবসায়ী ও কৃষিবিদদের অভিমত—তেজপাতা এখন শুধু কাউনিয়ার কৃষকদের জীবিকারই অবলম্বন নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করারও হাতিয়ার হয়ে উঠছে।